প্রচলিত মীলাদের ইতিহাস

৬ষ্ঠ শতাব্দী পর্যন্ত প্রচলিত মীলাদের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। ইসলামের সোনলী যুগ থেকে ৬০৪ হিজরী পর্যন্ত কারো কল্পনায় বেদআতের স্থান ছিল না, এবং এ ব্যপারে কেউ চিন্তাও করেন নি। বরং এ প্রচলিত মীলাদের আবির্ভাব হয় এক ধর্মদ্রোহী, খেয়ালী ও অপব্যয়ী বাদশা ও তার পা চাটা এক অর্থ লোভী আত্মপূজারী ও ভণ্ড মৌলভীর মাথায় ও অন্তরে।

সর্বপ্রথম মীলাদের আবিস্কৃত হয় মসূলের (ইরাক) এক শহর ৬০৪ হিজরীতে অজ্ঞ বাদশা মুজাফফর উদ্দিন কাওকারী ইবনে আরবল (মৃত্য ৬৩০ হিজরী)-এর নির্দেশে। তার শাসনামলে এ মীলাদ ব্যাপক প্রচার ও প্রসার লাভ করে। সে ঐ খাতে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করত। (ইবনে খালিক্কান) এ বাদশা সম্পর্কে ইমাম আহমদ ইবনে মুহাম্মদ মিশরী মালিকী র. লিখেছেন- যার বাংলা অর্থ; সে ছিল এক অপব্যয়ী বাদশা সমকালীন আলেমগণকে তাদের ইস্তেম্ভাত ও ইজতেহাদ অনুসারে আমল করার নির্দেশ দিতো। এ সুযোগে স্বার্থান্বেষী একদল আলেম তার হীন প্রলোভনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। তার কথা মত ১২ রবিউল আউয়ালে প্রচলিত মীলাদের অনুষ্ঠান করে। সেই প্রথম ব্যক্তি যে ধর্মের মধ্যে সর্বপ্রথম বেদআত আবিস্কার করে। আর এই অপব্যয়ী বাদশা বায়তুল মাল এবং প্রজাদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে বেদআত ও জসনে জুলুশের নামে খরচ করত। মূলতঃ এ নব আবিস্কৃত ধর্মের রূপ দেখিয়ে প্রজাদের মন জয় করাই ছিল তার আসল উদ্দেশ্য। যা সম্পর্কে আল্লামা জাহাবী বলেন, সে প্রতি বছর নবী কারীম সঃ এর নামে তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করত। (দুয়ালুল ইসলাম ১/১০২)

কথিত আছে খৃষ্টানরা মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশী দেখাতে গিয়ে হযরত ঈসা আঃ কে সরাসরি আল্লাহর পুত্র বলে আখ্যায়িত করে(নাউজু বিল্লাহ)। সে সময় ইরাকে যীশু খৃষ্টের জন্মদিনকে অত্য্ন্ত গুরুত্ব সহকারে অঢেল অর্থ ব্যয় করে উদযাপন করা হতো, তদানীন্তন কালের ইরাকের বাদশা মুজাফফর উদ্দিন কাওকারী খৃষ্টানদের মোক্কাবিলায় রবিউল আউয়াল মাসে প্রচলিত মীলাদ অনুষ্ঠান চালু করে। ওমর ইবনে ইয়াহইয়া আবুল খাত্তাব (মৃত-৬৩৩ হিজরী) নামক এক পা চাটা মৌলভী মীলাদের পক্ষে অযৌক্তিক দলিলের মাধ্যমে জায়েয বলে ফতওয়া দেয়। এ ফতওয়া প্রদান করার কারণে বাদশা তাকে এক হাজার পাউন্ড উপহার প্রদান করে। (দুয়ালুল ইসলাম- ১/১০৪)

আলোচ্য মৌলভী কেমন ছিলেন, জেনে নেয়া দরকার। হাফেজে হাদীস আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী র. নকল করেছেন- যে, উক্ত মৌলভী ওলামায়ে দ্ধীন এবং সলফে সালেহীনের ব্যপারে বেয়াদবীমূলক আচরণ করত, আর অপবিত্র ভাষায় অভ্যস্ত এবং অত্য্ন্ত নির্বোধ ও অহংকারী স্বভাবের লোক ছিল, আর ধর্মীয় ব্যপারে বেপরোয়া ও উদাসীন ছিল। ইবনে নাজার র. বলেন- তার মিথ্যাবাদীতা ও দূর্বলতার ব্যাপারে সকলকে একমত পেয়েছি। (লিসানুল মিজান: ৪/২৯৫)

Leave a comment